বৃটিশ ও ভারতীয় বিধর্মীরা মিলেমিশে মুসলমানদের ক্ষতিসাধন করেছে

ইয়েমেন যুদ্ধ, হুথি ড্রোন হামলা এবং ...


প্রশাসনের শীর্ষে বিধর্মী কর্মকর্তারা যে কতবড় সর্বনাশের কারণ হতে যাচ্ছে মুসলমানদের জন্য সেটা আজ এই বঙ্গবাসী মুসলমানেরা কল্পনাও করতে পারছে না। বাস্তব এটাই যে এই বিধর্মীরাই এই পাক ভারত উপমহাদেশে তিলে তিলে মুসলমানদের শোষণ করেছে। অথচ ইতিহাসের শিক্ষা এটাই যে মানুষ ইতিহাস থেকে শিক্ষা গ্রহন করে না।

ব্রিটিশ ঐতিহাসিক হান্টার বলেছে- “এ প্রদেশের ঘটনাবলীর সাথেই আমি বিশেষভাবে পরিচিত। তার ফলে আমি যতদূর জানি, তাতে করে ইংরেজ আমলে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এখানকার মুসলমান অধিবাসীগণ”। -( W.W Hunter The Indian Mussalmans. pp. 140-141)।

সে সময়ে বাংলা বলতে বাংলা, বিহার এবং উড়িষ্যাকে বুঝাতো। তৎকালে উড়িষ্যার মুসলমানদের পক্ষ থেকে বিভাগীয় কমিশনার ই, ডব্লিউ সলোনী, সি এস এর নিকটে প্রেরিত একটি আবেদনপত্রে তাদের করুণ অবস্থার চিত্র ফুটে উঠেছে। আবেদনপত্রে বলা হয়েছে-
“........অনুগত প্রজা হিসাবে দেশের প্রশাসন ব্যবস্থার সকল চাকুরীতে আমাদের সমান অধিকার আছে বলে আমরা বিশ্বাস করি। কিন্তু সত্যি কথা বলতে কি, উড়িষ্যার মুসলমানদেরকে ক্রমশঃ দাবিয়ে রাখা হচ্ছে এবং মাথা তুলে দাঁড়াবার কোন আশাই তাদের নেই। সম্ভ্রান্ত বংশে জন্মগ্রহণ করলেও জীবিকার্জনের পথ রুদ্ধ বলে আমরা দরিদ্র হয়ে পড়েছি এবং রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে আমাদের অবস্থা হয়েছে পানি থেকে ডাঙায় উঠানো মাছের ন্যায়। মুসলমানদের এই করুণ দুর্দশা আপনার সামনে তুলে ধরছি এই বিশ্বাসে যে, আপনি উড়িষ্যা বিভাগে মহারাণীর প্রতিনিধি এবং আশা করি আপনি বর্ণ ও জাতিধর্ম নির্বিশেষে সকল শ্রেণীর প্রতি সুবিচার করবেন। সরকারী চাকুরী থেকে বঞ্চিত হয়ে আমরা কপর্দকহীন হয়ে পড়েছি। আমাদের অবস্থা এমন শোচনীয় হয়ে পড়েছে যে, আমরা দুনিয়ার যেকোন প্রত্যন্ত এলাকায় যেতে রাজী আছি- তা হিমালয়ের বরফাচ্ছাদিত চূড়াই হোক অথবা সাইবেরিয়ার জনবিরল প্রান্তরই হোক- যদি আমরা এ আশ্বাস পাই যে, এভাবে দেশ তেকে দেশান্তরে ভ্রমণের ফলে প্রতি হপ্তায় মাত্র দশ শিলিং বেতনে কোন সরকারী চাকুরী আমাদের মিলবে”। -( W. W.Hunter The Indian Mussalmans, PP. 158-159)।
মুসলিম সম্ভ্রান্ত পরিবারের যাঁরা বিভিন্ন সরকারী পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন ইংরেজদের আগমনের পর চাকুরী থেকে বঞ্চিত হয়ে শুধুমাত্র এসব পরিবারই দারিদ্র্য কবলিত হয়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল তাই নয়, বরঞ্চ বাংলার সাধারণ মুসলিম পরিবারগুলির অবস্থাও তদনুরূপ হয়েছিল। বাংলার কৃষক ও তাতী সমাজও চরম দুর্দশার সম্মুখীন হয়েছিল।

No comments:

Post a Comment