জ্বর, ঠাণ্ডা, সর্দি ও কাশি হওয়া খাছ সুন্নত উনার অন্তর্ভুক্ত; কাজেই, জ্বর, ঠাণ্ডা, সর্দি, কাশি হলেই করোনা নয়

সিলসিলা এ নূর এ রাজারবাগ শরীফ - Berichten ...

জ্বর, ঠাণ্ডা, সর্দি, কাশি হলেই করোনা নয়। জ্বর, ঠাণ্ডা, সর্দি ও কাশি হওয়া খাছ সুন্নত উনার অন্তর্ভুক্ত। এ সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে, 
عن حضرت أَبِىْ عَسِيبٍ رضى الله تعالى عنه مَوْلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَاءَنِي جِبْرِيلُ بِالْحُمَّى وَالطَّاعُونِ فَأَمْسَكْتُ الْحُمَّى وَأَرْسَلْتُ الطَّاعُونَ إِلَى الشَّامِ فَالطَّاعُونُ شَهَادَةٌ لِأُمَّتِي وَرَحْمَةٌ لَهُمْ وَرِجْزٌ عَلَى الْكَافِرِينَ 
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আযাদকৃত গোলাম হযরত আবূ ‘আসীব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, একদা হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি আমার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ দুটি বিষয়- ১. জ্বর এবং ২. মহামারী নিয়ে আসলেন। আমি জ্বর (জ্বর, ঠাণ্ডা, সর্দি, কাশি, হালকা মাথা ব্যাথা) গ্রহণ করলাম। আর মহামারী (কলেরা, বসন্ত ইত্যাদি) শাম দেশে প্রেরণ করলাম। কাজেই, মহামারি হচ্ছে আমার উম্মতের জন্য শাহাদাত এবং রহমত স্বরূপ। আর কাফিরদের জন্য শাস্তি বা গযব স্বরূপ।” (আল কুনা ওয়াল আসমা লিদ দূলাবী ১/১৩১, মুসনাদে আহমদ ৩৪/৩৬৬, আল আহাদ ওয়াল মাছানী ১/৩৪২, ফাইদ্বুল ক্বদীর ১/৯৪ ইত্যাদি)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক রয়েছে,
“হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাস‘ঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট গেলাম, তখন তিনি (মহাসম্মানিত মারীদ্বী শান মুবারক) জ্বর গ্রহণ করেছিলেন। আমি আমার হাত দ্বারা উনাকে স্পর্শ করলাম এবং বললাম- ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি তো প্রবল (মহাসম্মানিত মারীদ্বী শান মুবারক) জ্বর মুবারক গ্রহণ করেছেন! তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হ্যাঁ, আপনাদের দুজনে যা ভোগ করেন, আমি তা গ্রহণ করেছি। হযরত ইবনে মাস‘ঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেন, আমি বললাম- এটা এই কারণে যে, আপনার জন্য দুই গুণ পুরুস্কার রয়েছে। (অর্থাৎ কোনো ব্যাক্তি জ্বরে আক্রান্ত হয়ে যদি খেয়াল করেন যে, এটা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক, তাহলে তিনি দুই গুণ ফযীলত লাভ করবেন। সুবহানাল্লাহ!) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হ্যাঁ। তারপর তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, কোনো মুসলমানের প্রতি যেকোনো কষ্ট পৌঁছুক না কেনো, হোক সেটা রোগ-বালা বা অন্য কোনো কিছু, মহান আল্লাহ পাক তিনি তা দ্বারা ঐ ব্যক্তি উনার গুনাহ্সমূহ এমনভাবে ঝেড়ে দেন, যেভাবে গাছ তার পাতা ঝাড়ে।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক রয়েছে,
وعن حضرت جابر رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قال دخل رسول الله صلى الله عليه وسلم على أم السائب رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ فقال مالك تزفزفين قالت الحمى لا بارك الله فيها فقال لا تسبي الحمى فإنها تذهب خطايا بني آدم كما يذهب الكير خبث الحديد
অর্থ: “হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত উম্মুস সায়িব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা উনার নিকট সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিয়ে ইরশাদ মুবারক করেন, আপনার কি হয়েছে? কান্না করছেন কেনো? তিনি জবাব দিলেন, জ্বর। মহান আল্লাহ পাক তিনি জ্বরের ভালো না করুন! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আপনি জ্বরকে গালি দিবেন না। কেননা, এটা মানুষের গুনাহ্সমূহকে এমনভাবে দূর করে, যেভাবে হাপর লোহার মরিচা দূর করে।” সুবহানাল্লাহ! (মুসলিম শরীফ)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার আরো ইরশাদ মুবারক রয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْعُطَاسَ
অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি হাঁচি পছন্দ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মিশকাত শরীফ)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার আরো ইরশাদ মুবারক রয়েছে,
عَنْ سَلَمَةَ بْنِ الْأَكْوَعِ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُشَمَّتُ الْعَاطِسُ ثَلَاثًا فَمَا زَادَ فَهُوَ مَزْكُومٌ
অর্থ: “হযরত সালামাহ ইবনে আকওয়া’ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হাঁচি দাতা ৩ বার হাঁচি দিবে। কেউ যদি এর বেশি হাঁচি দেয়, তাহলে সে সর্দিগ্রস্ত।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে মাজাহ্ শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ নং ৩৭১৪)
কাজেই জ্বর, ঠাণ্ডা, সর্দি, কাশি হওয়া এটা একটা খাছ সুন্নাত উনার অন্তর্ভূক্ত। এটাকে খারাপ বলা কাট্টা কুফরী। কেননা আকাইদের কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
اِهَانَةُ السُّنَّةِ كُفْرٌ
অর্থ: “সম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার ইহানত করা কুফরী।”
 মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ১০ম খলীফা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “ঠা-া, সর্দি, কাশি, জ্বর হওয়া এটা একটা খাছ সুন্নাত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত। এখন এর মধ্যে এরা করোনা ভাইরাসকে প্রবেশ করিয়ে বলতেছে, এটা করোনা ভাইরাসের রোগীদের হয়ে থাকে। না‘ঊযুবিল্লাহ! এটাতো আলাদা একটা জিবানু। যা হাদীছ শরীফে রয়েছে, প্রত্যেকটা রোগের একটা আকৃতি রয়েছে। রোগগুলো তো এভাবে আসে না। আসমান থেকে নাযিল হয়। নাযিল হয়ে রোগ যখন চলাচল শুরু করে, যেই যেই এলাকা দিয়ে যায়, আর যাকে যাকে সে স্পর্শ করে, তারই এই রোগ হয়। আর যাকে স্পর্শ করবে না, তার রোগ হবে না। আর সে তো সবাইকে স্পর্শ করবে না। যিনি খালিক্ব যিনি মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি যাদের জন্য পাঠিয়েছেন, তাদেরকেই স্পর্শ করবে, তাদেরই এই রোগ হবে। অন্য কারো হবে না। আর এই করোনা ভাইরাস যেটা, এটা একটা কাট্টা গযব। এটা মহামারী না। এটা কাফেরদের প্রতি কঠিন একটা গযব। আর জ্বর, ঠাণ্ডা, সর্দি, কাশির নাম দিয়ে তারা করোনা ভাইরাসের কথা বলে থাকে। এটা আরেকটা কুফরী। এরা বাল্যবিবাহ নিয়ে যেমন কুফরী করে থাকে, ঠিক একইভাবে জ্বর, ঠাণ্ডা, সর্দি, কাশি, জ্বর নিয়েও কুফরী করে যাচ্ছে। না‘ঊযুবিল্লাহ! আমাদের দেশে মুসলমানদের সারা বছরই ঠাণ্ডা, সর্দি, কাশি, জ্বর হয়ে থাকে। উল্লেখ্য ঠাণ্ডা, সর্দি, কাশি জ্বর ইত্যাদি হলে স্বাভাবিক ভাবেই চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থতা লাভ করবে। তবে যদি এই রোগে রোগীর মৃত্যূ নির্ধারিত থেকে থাকে তা আলাদা বিষয়। আর করোনা আলাদা একটা জিবানু। এটা একটা কাট্টা গযব। সেই গযবটা যার ভিতর প্রবেশ করবে, সে অবশ্যই মারা যাবে।” না‘ঊযুবিল্লাহ! সে কখনো বাঁচতে পারবে না। অর্থাৎ চিকিৎসার মাধ্যমে কখনো সুস্থতা লাভ করতে পারবে না। (আলোচনা মুবারক থেকে সংকলিত)

No comments:

Post a Comment